জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে উপজেলায় স্বাধীনতার পূর্ব থেকে বসবাস করে আসছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকেরা। উপজেলার বিভিন্ন ইউপির ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করেন এই সম্প্রদায়ের লোকেরা। এদের মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (সাঁওতাল) সম্প্রদায় এদের বসবাস রয়েছে ৮নং নন্দুয়ার ইউনিয়ের রাঙ্গাটুঙ্গী গ্রামে আর বাকিরা রয়েছে ৩ নং হোসেনগাও ইউপির রাউতনগর গ্রামে। উপজেলার আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোক সংখ্যা বেশি এই দুটি গ্রামে। উপজেলায় যেমন রয়েছে আদিবাসী (সাঁওতাল) সম্প্রদায়ের লোকেদের বসবাস সেই সাথে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (মুন্ডা) সম্প্রদায়ের পাহান পদবী মানুষের বসবাস। এদের বসবাস ২ নং নেকমরদ ইউপির পশ্চিম ঘনশ্যামপুর, পারকুন্ডা, ৩ নং হোসেনগাঁও ইউপির সিদলী, ৫ নং বাচোর ইউনিয়ের বাকসা সুন্দরপুর, ভাংবাড়ী, এবং ৭ নং রাতোর ইউপির পূর্ব ঘনশ্যামপুর, ৮ নং নন্দুয়ার ইউপির ভোলাপাড়া,সহ আর কিছু মুনিষগাঁও গ্রামে বসবাস করেন। অল্প সংখ্যক কয়েকটি আদিবাসী কামার পৌর শহরে বসবাস করেন। আর কিছু ৭নং রাতোর ইউপির পূর্ব ঘনশ্যামপুর গ্রাম বসবাস করেন। এই সম্প্রদায়ের সবার নিজস্ব রয়েছে মাতৃভাষা এবং রয়েছে কৃষ্টি সংস্কৃতি। এই সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে তাদের নিজ হাতে গড়া নিজস্ব সংগঠন। এই সংগঠনটি পৌরশহরে নয়ানপুর গ্রামে অবস্থিত। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এটি রেজিষ্ট্রেশন করা হয়। এইটির রেজি নং ১৫৯/০২ এই রেজিষ্ট্রেশনপ্রাপ্ত সংগঠনটির নাম রাণীশংকৈল উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতি। এই সংগঠনটিতে প্রতিবছর দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনটিতে যারা সদস্য রয়েছেন তারাই শুধুমাত্র ভোট দিতে পারেন। এবং প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে নির্বাচিত হতে পারেন। এই সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি সহ-সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, ক্যাশিয়ার সহ বাকি পদে সদস্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হোন। প্রতিবছর সংগঠনটি আদিবাসীদের বিভিন্ন দিবসগুলা বে সরকারি সংস্থা সহযোগিতায় যৌথভাবে উদযাপন করেন। বর্তমানে এই উপজেলায় আদিবাসী ও দলিত সম্প্রদায়ের আর্থ সামাজিক জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এর থ্রাইভ প্রজেক্ট। রাণীশংকৈল উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতি সংগঠনের সহ-সভাপতি শান্ত পাহান বলেন, আমরা সরকারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে সেইখানে আমরা বলেছি যে আমাদের রাণীশংকৈল উপজেলায় যে সরকারিভাবে একটি পৃথকভাবে ভূমি কমিশন গঠন করা হয় সেইটি। এই উপজেলায় এখনো ভূমিদস্যুরা আদিবাসীদের জমি জায়গা বেদল করে ভোগ দল করে খাচ্ছেন। এখনো রয়েছে আদিবাসীদের ভূমিসমস্য। রাণীশংকৈল উপজেলা আদিবাসীদের প্রাণের দাবি একটি দাবি সরকারের কাছে সেইটা হলো এই উপজেলায় পৃথক কালচার একাডেমি ভবন করতে হবে আদিবাসীদের জন্য। আদিবাসীদের জন্য যদি কালচার একাডেমি ভবন নির্মাণ করা হয় তাহলে খুব সহজেই আদিবাসী ছেলে মেয়েরা তাদের নিজস্ব ভাষায় নাচ, গান, চর্চা করতে পারবে এই কালচার একাডেমিক ভবনে। আর যদি এই কালচার একাডেমিক না করা হয় তাহলে আদিবাসীদের কৃষ্ট সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে পারে। সেই সাথে হারিয়ে যাবে তাদের সমাজ থেকে তাদের নিজস্ব ভাষায় নাচ গান করার অধিকার। কাউকে পিছনে ফেলে রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব না সেইভাবে আদিবাসী কৃষ্টি সংস্কৃতি সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে তাদের সমাজ থেকে হারিয়ে ফেলবে তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি।
শান্ত পাহান তাদের নিজস্ব সাদরী ভাষায় বলেন,
“আর নেই রেহেবোই আদিবাসী মনে হামনি’ “পছুয়াইকে যাবোই হামনি অগুয়াইকে”
অর্থাৎ আর থাকবো না আদিবাসীরা আমরা পিছিয়ে যাবো আমরা সামনের দিকে এগিয়ে।